বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
উদযাপিত হচ্ছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ‘শ্মশান দিপালী’ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহত, সড়ক অবরোধ-অগ্নিসংযোগ বরিশালে প্রথম দিনেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ন্যায্যমূল্যের দোকান প্র‍য়াত স্বজনদের স্বরনে কলাপাড়ায় শ্মশান দিপালী উৎসব পালিত আন্দোলন সংগ্রামে নিহতদের জন্য যুবদলের দোয়া মুনাজাত কলাপাড়ায় জাল ফেলাকে কেন্দ্র করে জেলেকে মারধর পটুয়াখালীতে সাবেক আ’লীগ ও বিএনপি করা দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে, সংবাদ সম্মেলন কলাপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক ৫ জন অনিয়মই যেন নিয়ম চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ইউনিয়ন বি এন পির প্রতিবাদ সমাবেশ গলাচিপায় গনআধিকার পরিষদের সমাবেশে হাজারো মানুষের ঢল কলাপাড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে ‘এইচপিভি’ টিকা প্রদান যুবদলের ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত বাউফলে জামায়াতে ইসলামীর গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত সড়কে নিরাপত্তায় নতুন আইনের দাবি বরিশালে কলাপাড়া পৌরসভার রাজস্ব লুটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা
আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন ববি শিক্ষার্থীরা

আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন ববি শিক্ষার্থীরা

Sharing is caring!

উত্থাপিত দাবি মেনে নেওয়া ও পরবর্তীতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার আশ্বাসে চূড়ান্তভাবে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থী ফজলুল হক রাজীব বলেন, গভীর রাতে আমাদের ওপর হামলার ঘটনায় কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরকেসহ ওই ঘটনায় জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওইদিনের ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এমন সংঘাত আর সংঘটিত হবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে বাস মালিক সমিতি, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও স্থানীয় বাড়ির মালিকদের প্রতিনিধিরা। এমন অবস্থায় আমরা সড়ক অবরোধসহ জনগণের দুর্ভোগ বাড়ায় এমন জোরদার আন্দোলন থেকে সড়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

যদিও একটি দাবি ছাড়া আর কোনো দাবি পূরণ হয়নি বলে জানিয়েছেন মারধরের শিকার শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান তমাল। তিনি বলেন, তিন দফা দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলনে নেমেছিলাম। এর মধ্যে বাস-মালিক সমিতির নেতা কাওছার হোসেন শিপনের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের এবং তাকে গ্রেপ্তারের দাবি ছিল অন্যতম। আরেকটি দাবি ছিল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভূমিকা রাখবে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে তার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করা ছাড়া আর কোনো দাবি পূরণ করেনি।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এই শিক্ষার্থী বলেন, আজকের বৈঠকে আমি ছিলাম না। মূলত বৈঠকের সিদ্ধান্ত পূর্ব নির্ধারিত ছিল। তাই সেখানে ছিলাম না।

তমালের দাবি, সেই রাতে আমাদের ২৫-৩০টি মোবাইল, মানিব্যাগ নিয়ে গেছে। সেগুলোর বিষয়ে কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, আমাদের দাবি মোটামুটি পূরণ হয়েছে। তবে সেই রাতে আমাদের মানিব্যাগ, মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে কেবলমাত্র থানায় জিডি করতে বলেছে।

আন্দোলনে নামার পরইতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিচারের আশ্বাস দিয়েছিলেন, তখন কেন আপনারা আন্দোলন প্রত্যাহার করেননি- এমন প্রশ্নের জবাবে এই শিক্ষার্থী বলেন, তখন বাস শ্রমিকদের সঙ্গে আমাদের কোনো কথা হয়নি। তবে আজকের বৈঠকের মধ্য দিয়ে সমঝোতা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে সবার সমন্বয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে তাতে সবাই সহযোগিতা করবো।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে মারধরের শিকার শিক্ষার্থী সবাই ছিলেন না। তবে তাদের মনোনীত প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে স্থানীয় প্রশাসন, বাস মালিক সমিতি, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও নগরীর রূপাতলী হাউজিং সোসাইটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। প্রায় দুই ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তারা।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রশান্ত কুমার রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান, বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার  (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন, বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি মমিনউদ্দিন কালু, বরিশাল জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, রূপাতলী হাউজিং এলাকার বাড়ির মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন।

বাস মালিক সমিতির সভাপতি মমিন উদ্দিন কালু বলেন, আমি এখনও বলছি, আগেও বলেছি শিক্ষার্থীদের কোনো পরিবহন শ্রমিকরা মারধর করেননি।

রূপাতলী হাউজিং সোসাইটির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, সেদিনের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমরাও দুঃখ প্রকাশ করছি। এছাড়া দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছি। একই সঙ্গে এখন থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় আমরাও ভূমিকা রাখবো।

বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন বলেন, হামলাকারেদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এছাড়াও রূপাতলী এলাকায় পুলিশ টহল ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত দেড়টার দিকে রূপাতলী হাউজিংয়ের সি-ব্লকের হারুন ম্যানশন ভবনের মেসে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সেখানে অবস্থানকারী ছাত্রদের মারধর করে মারাত্মক জখম করা হয়। হামলায় ১১ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।

এর আগে ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করেন রূপাতলী বিআরটিসি কাউন্টারের সহকারী রফিক। এ সময় আরও এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেন রফিক ও কাউন্টারম্যান বাদল। প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিআরটিসি কাউন্টার ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করেন।

সড়ক অবরোধ তুলে দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে আসেন শ্রমিক ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ। তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে রাত দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের মেসে ঢুকে মারধর করে কতিপয় সন্ত্রাসী। হামলার পর পরই রাত আড়াইটার দিকে কাঠ পুড়িয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের চাপে দুই পরিবহন শ্রমিককে আটক করে পুলিশ। আটক দুজন হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল না বলে দাবি করেন শিক্ষার্থী ও শ্রমিকরা। এর প্রেক্ষিতে পাল্টা কর্মসূচি দেন শ্রমিকরা। টানা সাতদিন আন্দোলনের পর বুধবার আশ্বাস পেয়ে চূড়ান্তভাবে আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন শিক্ষার্থীরা।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD